বাল্য বিবাহ
মোঃ জমির হোসেন পারভেজ
( রাস্তার এক পাশে সৌদি প্রবাসী রাসেল দাঁড়িয়ে
থাকবে,এমন সময় অষ্টম শ্রেনির ছাত্রী সুমা ও মিনা কথা বলতে বলতে চলে যাবে)
সুমা = এবছর আমরা অষ্টম শ্রেনিতে উঠেছি, ভাল ভাবে পড়া লেখা না করলে জে. এস.সি পাস করা যাবেনা।
মিনা = ঠিক কথা বলেছিস সুমা, আমাদের এখন ঠিক মতো পড়তে হবে। টি. ভি ও ফেসবুক দেখা বন্ধ করতে হবে।
( এমন সময় রাসেল তাদের পাশে এসে বলবে)
রাসেল = বাহ তোমরা দু'জন খুব সুন্দরী, মনে হয় দিনের বেলায় পূর্ণিমার চাঁদের উদয় হয়েছে।
সুমা =এই মিয়া, মুখ সামলে কথা বল। সুন্দরী মেয়ে দেখলে কবি হতে ইচ্ছে করে নাকি?
রাসেল= না ইয়ে মা-নে আমি বলতে চাচ্ছি তোমার বাবার নাম কি?
সুমা = আমার আব্বার নাম লিয়াকত আলী খাঁ।
রাসেল = ও তুমি লিয়াকত আলী খাঁ চাচার মেয়ে।
মিনা = সুমা, পুরুষ জাতি খুব হারাপ, সুন্দরী মেয়ে দেখলে বলে - এমন চাচার মেয়ে তেমক চাচার মেয়ে, চল
চল বাড়ি চল। (সুমা ও মিনা চলে যাবে)
রাসেল = বাহ কি হাস্য মুখরিত মেয়ে, এমন মেয়েকে বিয়ে না করে কি থাকতে পারি, প্রয়োজনে এক টাকাও যৌতুক নেবনা,প্রয়োজনে লিয়াকত চাচাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বলব, চাচা আপনার মেয়ে সুমাকে আমি
চাই,মানে বিয়ে করতে চাই, তখন চাচা বলবে বল কি বাবা এটা আমার সু-ভাগ্য,হা হা হা। (রাসেল চলে যাবে)
(লিয়াকত আলী খাঁ বসে হুক্কা টানছে এমন সময় রাসেলের প্রবেশ)
রাসেল= খাঁ চাচা বাড়িতে আছেন?
লিয়াকত আলী খাঁ= কে আমাকে ডাকছে?
রাসেল= চাচা আমি আপনাদের রাসেল।
লিয়াকত আলী খাঁ= চিনেছি বাবা, সৌদি থেকে কবে এলে, বিয়ে করেছ কি?
রাসেল = চাচা, সৌদি থেকে এসেছি এক মাস হয়েছে। বৌ খোঁজতেছি।
লিয়াকত আলী খাঁ= মেয়ে পেয়েছ?
রাসেল = পেয়েছি চাচা।
লিয়াকত আলী খাঁ= কার মেয়ে?
রাসেল= কেন আপনার মেয়ে সুমাকে।
লিয়াকত আলী খাঁ = আমার মেয়ে সুমাকে! তোমরা কত বড়লোক আমার মেয়েকে বিয়ে করবে।
রাসেল= করব মানে, ৫০ হাজার টাকা উপহার দিয়ে বিয়ে করব।
লিয়াকত আলী খাঁ= তাহলে বাবা আমার কোন আপত্তি নাই। ( এমন সময় সুমার প্রবেশ)
সুমা= বাবা আমি এখন বিয়ে করবনা, আমি পড়ালেখা করব।
লিয়াকত আলী খাঁ= চুপ কর, মেয়েদের বেশি পড়া লেখা করা ভালনা, যাও ঘরে যাও। ( সুমার প্রস্তান)
রাসেল= তাহলে চাচা এই কথাই রইল। আগামী ২৫ তারিখে বিয়ে আর মাত্র ১০ দিন বাকি।
লিয়াকত আলী খাঁ= হা তোমার তারিখই ঠিক থাকবে।
রাসেল= চলি চাচা।
লিয়াকত আলী খাঁ= এবার আস বাবা। (রাসেলের প্রস্তান) ( মঞ্চে মিনার প্রবেশ)
মিনা= সুমা ঘরে আছিস, স্কুলে যাবিনা? ( এমন সময় সুমার প্রবেশ)
সুমা= মিনা, তুই আমাকে বাঁচা,
মিনা= তোর কি হয়েছে?
সুমা= বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে। মিনা, আমি বিয়ে করতে চাইনা। আমি পড়া লেখা করতে চাই। আমি মানুষ হতে চাই।
মিনা= আমি চাচাকে বুঝাব। সুমা= বাবা তোর কথা শুনবেনা।
মিনা = চল মমিনুল স্যার কে সব খুলে বলি।
সুমা = হা তা করা যায় চল স্যারের কাছে চল। ( দু জনের প্রস্তান) ( লিয়াকত আলী খাঁ বসে হুক্কা টানবে এমন সময় মমিন স্যার, সুমা, মিনার প্রবেশ)
মমিন স্যার= সুমার বাবা বাড়িতে আছেন?
লিয়াকত আলী খাঁ= আরে মাস্টার মহাশয় যে, কি মনে করে এলেন?
মমিন স্যার= শুনেছি সুমার নাকি বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন?
লিয়াকত আলী খাঁ= ঠিক শুনেছেন মাস্টার মহাশয়, ছেলেটার অনেক টাকা, পূন্যস্থান সৌাদি আরবে থাকে। আমার মেয়ে সেই বাড়িতে সুখে থাকবে। সে আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিবে। মমিন
স্যার= আপনি কেমন বাবা, ৫০ হাজার টাকার লোভে আপনার মেয়ের জীবন নষ্ট করছেন
লিয়াকত আলী খাঁ= নষ্ট হবে কেন মাস্টার মহাশয়, আমার মেয়ে ঐ বাড়িতে ভাল খাবে, ভাল পরবে, ভাল থাকবে।
মমিন স্যার= না সে ভাল থাকবেনা, বছর না যেকেই সে অন্তমসত্তা হবে, অল্প বয়সে মেয়েরা অন্তঃসত্তা হলে স্বান্থ্য নষ্ট হয়ে যায়, প্রসব কালে বেশির ভাগ অল্প বয়সের মেয়েরা মারা যায়। সরকারি জরিপে দেখা গেছে বাল্য বিবাহ
দেবার কারনে ৮০ শতাংশ মা প্রসব কালে মারা যায়। শুধু তায় নয়, যদি কেউ থানায় মামলা করে আপনাকে জেল হাটতে হবে তিন মাস।
লিয়াকত আলী খাঁ= এবার আমার চোখ খুলে গেছে মাস্টার মহাশয়, আমি বাপ হয়ে মেয়ের মৃত্যু কামনা করতে পারিনা। আমি টাকা চাইনা,আমি আমার মেয়ের হাসি মুখ দেখতে চাই,পড়া লেখা করিয়ে মেয়েকে মানুষ করতে চাই।
সুমা= ধন্যবাদ বাবা, তুমি সত্যিই আমার বাবা।
মমিন স্যার= আসুন আমরা সকলে বাল্য বিবাহকে না বলি।
সকলে= যদি দেখি কোথাও বাল্য বিবাহের প্রস্তুতি অবিরত, সকলে মিলে করব তা প্রতিহত।
সমাপ্ত
মোঃ জমির হোসেন পারভেজ
( রাস্তার এক পাশে সৌদি প্রবাসী রাসেল দাঁড়িয়ে
থাকবে,এমন সময় অষ্টম শ্রেনির ছাত্রী সুমা ও মিনা কথা বলতে বলতে চলে যাবে)
সুমা = এবছর আমরা অষ্টম শ্রেনিতে উঠেছি, ভাল ভাবে পড়া লেখা না করলে জে. এস.সি পাস করা যাবেনা।
মিনা = ঠিক কথা বলেছিস সুমা, আমাদের এখন ঠিক মতো পড়তে হবে। টি. ভি ও ফেসবুক দেখা বন্ধ করতে হবে।
( এমন সময় রাসেল তাদের পাশে এসে বলবে)
রাসেল = বাহ তোমরা দু'জন খুব সুন্দরী, মনে হয় দিনের বেলায় পূর্ণিমার চাঁদের উদয় হয়েছে।
সুমা =এই মিয়া, মুখ সামলে কথা বল। সুন্দরী মেয়ে দেখলে কবি হতে ইচ্ছে করে নাকি?
রাসেল= না ইয়ে মা-নে আমি বলতে চাচ্ছি তোমার বাবার নাম কি?
সুমা = আমার আব্বার নাম লিয়াকত আলী খাঁ।
রাসেল = ও তুমি লিয়াকত আলী খাঁ চাচার মেয়ে।
মিনা = সুমা, পুরুষ জাতি খুব হারাপ, সুন্দরী মেয়ে দেখলে বলে - এমন চাচার মেয়ে তেমক চাচার মেয়ে, চল
চল বাড়ি চল। (সুমা ও মিনা চলে যাবে)
রাসেল = বাহ কি হাস্য মুখরিত মেয়ে, এমন মেয়েকে বিয়ে না করে কি থাকতে পারি, প্রয়োজনে এক টাকাও যৌতুক নেবনা,প্রয়োজনে লিয়াকত চাচাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বলব, চাচা আপনার মেয়ে সুমাকে আমি
চাই,মানে বিয়ে করতে চাই, তখন চাচা বলবে বল কি বাবা এটা আমার সু-ভাগ্য,হা হা হা। (রাসেল চলে যাবে)
(লিয়াকত আলী খাঁ বসে হুক্কা টানছে এমন সময় রাসেলের প্রবেশ)
রাসেল= খাঁ চাচা বাড়িতে আছেন?
লিয়াকত আলী খাঁ= কে আমাকে ডাকছে?
রাসেল= চাচা আমি আপনাদের রাসেল।
লিয়াকত আলী খাঁ= চিনেছি বাবা, সৌদি থেকে কবে এলে, বিয়ে করেছ কি?
রাসেল = চাচা, সৌদি থেকে এসেছি এক মাস হয়েছে। বৌ খোঁজতেছি।
লিয়াকত আলী খাঁ= মেয়ে পেয়েছ?
রাসেল = পেয়েছি চাচা।
লিয়াকত আলী খাঁ= কার মেয়ে?
রাসেল= কেন আপনার মেয়ে সুমাকে।
লিয়াকত আলী খাঁ = আমার মেয়ে সুমাকে! তোমরা কত বড়লোক আমার মেয়েকে বিয়ে করবে।
রাসেল= করব মানে, ৫০ হাজার টাকা উপহার দিয়ে বিয়ে করব।
লিয়াকত আলী খাঁ= তাহলে বাবা আমার কোন আপত্তি নাই। ( এমন সময় সুমার প্রবেশ)
সুমা= বাবা আমি এখন বিয়ে করবনা, আমি পড়ালেখা করব।
লিয়াকত আলী খাঁ= চুপ কর, মেয়েদের বেশি পড়া লেখা করা ভালনা, যাও ঘরে যাও। ( সুমার প্রস্তান)
রাসেল= তাহলে চাচা এই কথাই রইল। আগামী ২৫ তারিখে বিয়ে আর মাত্র ১০ দিন বাকি।
লিয়াকত আলী খাঁ= হা তোমার তারিখই ঠিক থাকবে।
রাসেল= চলি চাচা।
লিয়াকত আলী খাঁ= এবার আস বাবা। (রাসেলের প্রস্তান) ( মঞ্চে মিনার প্রবেশ)
মিনা= সুমা ঘরে আছিস, স্কুলে যাবিনা? ( এমন সময় সুমার প্রবেশ)
সুমা= মিনা, তুই আমাকে বাঁচা,
মিনা= তোর কি হয়েছে?
সুমা= বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে। মিনা, আমি বিয়ে করতে চাইনা। আমি পড়া লেখা করতে চাই। আমি মানুষ হতে চাই।
মিনা= আমি চাচাকে বুঝাব। সুমা= বাবা তোর কথা শুনবেনা।
মিনা = চল মমিনুল স্যার কে সব খুলে বলি।
সুমা = হা তা করা যায় চল স্যারের কাছে চল। ( দু জনের প্রস্তান) ( লিয়াকত আলী খাঁ বসে হুক্কা টানবে এমন সময় মমিন স্যার, সুমা, মিনার প্রবেশ)
মমিন স্যার= সুমার বাবা বাড়িতে আছেন?
লিয়াকত আলী খাঁ= আরে মাস্টার মহাশয় যে, কি মনে করে এলেন?
মমিন স্যার= শুনেছি সুমার নাকি বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন?
লিয়াকত আলী খাঁ= ঠিক শুনেছেন মাস্টার মহাশয়, ছেলেটার অনেক টাকা, পূন্যস্থান সৌাদি আরবে থাকে। আমার মেয়ে সেই বাড়িতে সুখে থাকবে। সে আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিবে। মমিন
স্যার= আপনি কেমন বাবা, ৫০ হাজার টাকার লোভে আপনার মেয়ের জীবন নষ্ট করছেন
লিয়াকত আলী খাঁ= নষ্ট হবে কেন মাস্টার মহাশয়, আমার মেয়ে ঐ বাড়িতে ভাল খাবে, ভাল পরবে, ভাল থাকবে।
মমিন স্যার= না সে ভাল থাকবেনা, বছর না যেকেই সে অন্তমসত্তা হবে, অল্প বয়সে মেয়েরা অন্তঃসত্তা হলে স্বান্থ্য নষ্ট হয়ে যায়, প্রসব কালে বেশির ভাগ অল্প বয়সের মেয়েরা মারা যায়। সরকারি জরিপে দেখা গেছে বাল্য বিবাহ
দেবার কারনে ৮০ শতাংশ মা প্রসব কালে মারা যায়। শুধু তায় নয়, যদি কেউ থানায় মামলা করে আপনাকে জেল হাটতে হবে তিন মাস।
লিয়াকত আলী খাঁ= এবার আমার চোখ খুলে গেছে মাস্টার মহাশয়, আমি বাপ হয়ে মেয়ের মৃত্যু কামনা করতে পারিনা। আমি টাকা চাইনা,আমি আমার মেয়ের হাসি মুখ দেখতে চাই,পড়া লেখা করিয়ে মেয়েকে মানুষ করতে চাই।
সুমা= ধন্যবাদ বাবা, তুমি সত্যিই আমার বাবা।
মমিন স্যার= আসুন আমরা সকলে বাল্য বিবাহকে না বলি।
সকলে= যদি দেখি কোথাও বাল্য বিবাহের প্রস্তুতি অবিরত, সকলে মিলে করব তা প্রতিহত।
সমাপ্ত